কোটিপতি হওয়ার ৬টি অভ্যাস যা আপনাকে কেউ বলবে না! -রাউল পাল, জসপ্রীত সিং এবং হামফ্রে ইয়াং

এই লেখাটি “The Diary Of A CEO” ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া একটি পডকাস্টের প্রতিলিপি থেকে নেওয়া হয়েছে, যেখানে তিনজন আর্থিক বিশেষজ্ঞ Raoul Pal, Jaspreet Singh, and Humphrey Yang ব্যক্তিগত অর্থ, সম্পদ তৈরি এবং বিনিয়োগের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন। বক্তারা ঐতিহ্যবাহী আর্থিক ধারণা যেমন সঞ্চয়কারী হওয়া বা নিজেদের জন্য বাড়ি কেনাকে খারাপ পরামর্শ বলে প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ এগুলি ব্যক্তিকে দরিদ্র করে তুলতে পারে। আলোচনায় অবিলম্বে ঋণ, বিশেষ করে উচ্চ সুদের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধের প্রয়োজনীয়তা এবং খরচ কমানোর মাধ্যমে আর্থিক সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়। এছাড়াও, বক্তারা স্টক মার্কেট, রিয়েল এস্টেট, এবং বিশেষ করে ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো সম্পদগুলিতে বিনিয়োগের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে বিতর্ক করেন, যেখানে একজন বক্তা বিটকয়েনের উচ্চ ঝুঁকির বিপরীতে এটির বিশাল প্রতিদান তুলে ধরেন। শেষে, আয় বাড়ানোর জন্য নিজের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ এবং আবেগহীন বিনিয়োগের অভ্যাস গড়ে তোলার উপর মনোযোগ দেওয়া হয়।

কোটিপতি হওয়ার অভ্যাস

আমাদের ছোটবেলা থেকে একটি নির্দিষ্ট আর্থিক পথের কথা বলা হয়েছে: একটি ভালো চাকরি খুঁজে বের করো, কিছু টাকা জমাও, তারপর একটি বাড়ির জন্য মর্টগেজ বা লোন নাও। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই উপদেশকেই সম্পদ তৈরির মূলমন্ত্র হিসেবে ধরা হয়েছে। কিন্তু আজকের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই পুরানো নিয়মগুলো শুধু যে অচল তাই নয়, বরং আপনার আর্থিক ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনকও হতে পারে। সত্যি কথা হলো, এই পুরোনো পরামর্শ মেনে চললে “আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনার চেয়েও দরিদ্র হবে।”

সম্পদের দাম, যেমন বাড়ি বা স্টক, আকাশছোঁয়া। কিন্তু সেই তুলনায় মানুষের বেতন বাড়ছে না। ফলে, শুধুমাত্র চাকরি করে আর টাকা জমিয়ে ধনী হওয়াটা এখন একপ্রকার অসম্ভব স্বপ্ন। আজকের যুগে সত্যিকারের সম্পদ তৈরি করতে হলে আপনাকে কিছু প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে ভাবতে হবে। এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যা হয়তো অদ্ভুত বা উল্টো মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলোই আপনাকে আর্থিক স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। চলুন, এমন ৬টি অভ্যাস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যা ধনী ব্যক্তিরা অনুসরণ করেন, কিন্তু সাধারণ মানুষকে সচরাচর বলা হয় না।

অভ্যাস ১: টাকা ‘জমানো’ বন্ধ করুন, বিনিয়োগ শুরু করুন

সবচেয়ে প্রচলিত আর্থিক উপদেশগুলোর একটি হলো টাকা জমানো। কিন্তু আজকের বাস্তবতায়, ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে রাখাটা একটি নিশ্চিত লোকসানের পথ। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। এর কারণ হলো মুদ্রার অবমূল্যায়ন বা মুদ্রাস্ফীতি (inflation)।

সহজভাবে বোঝার জন্য একটি চায়ের মগের উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন, আজ একটি মগের দাম ১০০ টাকা। যদি সরকার প্রচুর পরিমাণে নতুন টাকা ছাপায়, তাহলে বাজারে টাকার জোগান বেড়ে যাবে এবং আপনার হাতে থাকা প্রতিটি টাকার মূল্য কমে যাবে। তখন বিক্রেতা সেই একই মগের জন্য আর ১০০ টাকা চাইবে না, হয়তো ১৫০ টাকা চাইবে। এটি একটি দৃষ্টিভ্রম (optical illusion) যে সম্পদের দাম বাড়ছে; আসলে তা নয়, বরং আপনার টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ঠিক এই কারণেই আপনার জমানো টাকা সময়ের সাথে সাথে তার মূল্য হারাতে থাকে।

এই বাস্তবতা বোঝার পর একটাই পথ খোলা থাকে: আপনার টাকাকে অবশ্যই বিনিয়োগ করতে হবে, যাতে তা মুদ্রাস্ফীতির হারের চেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে। কেবল টাকা জমিয়ে রাখলে আপনি প্রতিদিন একটু একটু করে গরিব হতে থাকবেন।

শুধু টাকা জমিয়ে রাখলে আপনার লোকসান নিশ্চিত। এর মানে আপনি প্রতিদিন একটু একটু করে গরিব হচ্ছেন।

 বিনিয়োগের বিভিন্ন পথ: আপনার জন্য কোনটি সেরা?

আপনি বিনিয়োগে কতটা সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকতে চান, তার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন পথ বেছে নিতে পারেন। নিচে তিনটি প্রধান পদ্ধতির তুলনা করা হলো:

বিনিয়োগের ধরণমূল সুবিধামূল অসুবিধা
আর্থিক উপদেষ্টা (Financial Advisor)এটি সম্পূর্ণ “হ্যান্ডস-অফ” বা ঝামেলাহীন। আপনার হয়ে অন্য কেউ সব সিদ্ধান্ত নেয়।এর ফি অনেক বেশি। ৩০ বছরে আপনাকে একজন উপদেষ্টাকে $৬০০,০০০ পর্যন্ত ফি দিতে হতে পারে, যা আপনার চূড়ান্ত আয় কমিয়ে দেয়।
প্যাসিভ ইনভেস্টিং (Passive Investing)এটি সহজ, কম খরচের এবং ঐতিহাসিকভাবে কার্যকর। S&P 500 (আমেরিকার ৫০০টি বৃহত্তম কোম্পানিতে বিনিয়োগ) বছরে গড়ে ১০% রিটার্ন দিয়েছে।বাজারের মন্দার সময় ধৈর্য ধরে রাখতে হয়।
অ্যাক্টিভ ইনভেস্টিং (Active Investing)এতে বেশি রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে (যেমন, ১৩%)।অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ৯০%-এর বেশি সক্রিয় বিনিয়োগকারী বাজারের গড়কে হারাতে পারে না এবং ৯৮% মানুষের জন্য এই পথটি স্পষ্টভাবে সুপারিশ করা হয় না

আপনি যে পথই বেছে নিন না কেন, প্রত্যেক বিনিয়োগকারীকে একটি সাধারণ কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়।

অভ্যাস ২: নিজের বাড়িকে বিনিয়োগ নয়, ব্যয় হিসেবে দেখুন

“একটা বাড়ির জন্য মর্টগেজ নাও” – এই উপদেশটিকে বলা হয় একজন মানুষকে দেওয়া সবচেয়ে খারাপ পরামর্শগুলোর মধ্যে একটি। আমাদের সমাজে নিজের একটি বাড়ি থাকাকে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু আর্থিক দিক থেকে দেখলে, যে বাড়িতে আপনি নিজে বসবাস করেন, তা আসলে একটি বড় ধরনের ব্যয়।

এর একটি কারণ হলো ৩০ বছর মেয়াদী মর্টগেজের গঠন। আপনি যখন একটি বাড়ির জন্য লোন নেন, তখন প্রথম ২০ বছর আপনার মাসিক কিস্তির সিংহভাগই চলে যায় ব্যাংকের সুদ মেটাতে। আপনার বাড়ির মূল মালিকানা বা ইক্যুইটি (equity) তৈরিতে সেই টাকা খুব সামান্যই অবদান রাখে। অর্থাৎ, দুই দশক ধরে আপনি মূলত ব্যাংকের পকেট ভরছেন। এর সাথে যোগ হয় বাড়ির দাম বাড়ার সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান হারে প্রপার্টি ট্যাক্স এবং ইন্স্যুরেন্সের মতো লুকানো খরচ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো সুযোগের ব্যয় (opportunity cost)। আজকের যুগে সম্পদের দাম বেতনের তুলনায় এতটাই বেড়ে গেছে যে, একটি বাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে রাখাটা আগের চেয়ে অনেক বড় ভুল। যেমন, লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট কেনার খরচ আগে যেখানে গড় আয়ের ৩.৫ গুণ ছিল, এখন তা বেড়ে ১২ গুণ হয়েছে। বাড়ির ডাউন পেমেন্টের টাকাটা যদি স্টক মার্কেটের মতো উচ্চ রিটার্ন দিতে সক্ষম কোনো সম্পদে বিনিয়োগ করা যেত, তাহলে আপনার সম্পদ অনেক দ্রুতগতিতে বাড়ত। বাড়ি কিনুন, তবে থাকার জন্য, সম্পদ তৈরির প্রধান উপায় হিসেবে নয়।

অভ্যাস ৩: বাজারে বিনিয়োগের আগে নিজের ওপর বিনিয়োগ করুন

অনেকেই বলেন, “আমার কাছে তো বিনিয়োগ করার মতো যথেষ্ট টাকা নেই।” যদি আপনার কাছে মাত্র ১,০০০ ডলার বা প্রায় ১ লক্ষ টাকা থাকে, তাহলে কী করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সামান্য টাকা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করলে তা আপনার জীবনে নাটকীয় কোনো পরিবর্তন আনবে না। ১০% রিটার্ন পেলেও আপনি বছর শেষে মাত্র ১০,০০০ টাকা লাভ করবেন, যা দিয়ে তেমন কিছুই হবে না।

এর চেয়ে অনেক বুদ্ধিমানের কাজ হলো ওই টাকা নিজের দক্ষতা বাড়ানোর পেছনে বিনিয়োগ করা। এমন কিছু শিখুন যা আপনার আয় করার ক্ষমতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন, আপনি গুগল অ্যাডওয়ার্ডস (Google AdWords), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বা বিক্রয় দক্ষতা (Sales) শিখতে পারেন। এর পেছনের কৌশলটি হলো “নলেজ আরবিট্রেজ” (knowledge arbitrage)। যখন কোনো নতুন প্রযুক্তি আসে, তখন বেশিরভাগ মানুষই তা বোঝে না। আপনি যদি সেই প্রযুক্তি শিখে অজ্ঞদের জন্য জ্ঞানের সেতু তৈরি করতে পারেন, তবে সেখানেই আপনার আসল মূল্য তৈরি হবে। এই দক্ষতাগুলো আপনাকে যেকোনো ব্যবসার জন্য আরও মূল্যবান করে তুলবে এবং আপনি এর বিনিময়ে অনেক বেশি আয় করতে পারবেন। আপনার আয় বাড়লে, বিনিয়োগ করার জন্য আপনার হাতে আরও বেশি পুঁজি থাকবে।

জীবনে অর্জন করার মতো সেরা দক্ষতা হলো বিক্রি করতে শেখা। মানুষের সামনে স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলা এবং নিজের বার্তা অন্যের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতাই জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।

অভ্যাস ৪: আবেগকে হারাতে একটি সিস্টেম তৈরি করুন

বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা। স্টক মার্কেটের ওঠানামা দেখে সাধারণ মানুষ প্রায়ই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বাজার যখন পড়তে থাকে, তখন ভয়ে সবাই তাদের শেয়ার বিক্রি করে দেয়, যা একটি বিরাট ভুল সিদ্ধান্ত। এই আবেগতাড়িত সিদ্ধান্তগুলোই বিনিয়োগকারীদের লোকসানের মূল কারণ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শত্রু আপনি নিজেই, আর তাই আত্ম-ধ্বংসের বিরুদ্ধে একটি সিস্টেম তৈরি করা আপনার জন্য অপরিহার্য।

এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হলো একটি পদ্ধতি তৈরি করা যা আপনাকে আবেগ থেকে দূরে রাখবে। এর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো “ডলার-কস্ট অ্যাভারেজিং” (Dollar-Cost Averaging)। এই পদ্ধতিতে আপনি বাজারের অবস্থা যা-ই হোক না কেন, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর (যেমন প্রতি মাসে) বিনিয়োগ করতে থাকেন। এই কৌশলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি বাজারের পতনকে আপনার জন্য একটি সুযোগে পরিণত করে। কারণ, দাম যখন কম থাকে, তখন আপনি একই টাকায় বেশি শেয়ার কিনতে পারেন। এটি দীর্ঘমেয়াদে আপনার শেয়ার কেনার গড় খরচ কমিয়ে আনে এবং কখন বাজারে প্রবেশ করতে হবে বা বের হতে হবে, সেই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিক চাপ থেকে আপনাকে মুক্তি দেয়।

একটি মজার তথ্য হলো, আমেরিকার সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্টগুলো মৃত ব্যক্তিদের। কারণ তারা কোনো রকম আবেগতাড়িত সিদ্ধান্ত নেন না। তারা শুধু তাদের বিনিয়োগকে সময়ের সাথে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে দেন।

অভ্যাস ৫: খরচ কমানোর চেয়ে আয় বাড়ানোতে মনোযোগ দিন

আর্থিক পরামর্শের জগতে একটি সাধারণ কথা হলো খরচ কমানো – যেমন, প্রতিদিনের কফির খরচ বাঁচানো। যদিও খরচ কমানোকে অনেকে দ্রুত ফল পাওয়ার উপায় হিসেবে দেখেন, এবং নিজের টাকা কোথায় যাচ্ছে তা জানার জন্য ৩০-৬০ দিন খরচ ট্র্যাক করা একটি জরুরি প্রথম পদক্ষেপ, কিন্তু সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুযোগটি আসে আয় বাড়ানোর মাধ্যমে।

ছোট ছোট খরচ বাঁচানোর জন্য যে মানসিক শক্তি এবং সময় ব্যয় হয়, সেই একই প্রচেষ্টা যদি নতুন আয়ের উৎস খোঁজার পেছনে লাগানো যায়, তবে তার ফল হয় অনেক বেশি। আজকের যুগে সফল ব্যক্তিরা প্রায়শই একাধিক আয়ের উৎসের উপর নির্ভর করেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি প্যাডেল টেনিস খেলতে ভালোবাসেন এবং মোটামুটি ভালো খেলেন, তবে আপনি অন্যদেরকে টাকার বিনিময়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এর জন্য আপনাকে পেশাদার খেলোয়াড় হতে হবে না। আপনার যা কিছু অনন্য দক্ষতা আছে, সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে অতিরিক্ত আয় করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দিন।

অভ্যাস ৬: আপনার নেটওয়ার্ককে একটি সম্পদ হিসেবে দেখুন

সম্পদ তৈরি করা কেবল টাকা এবং কৌশলের খেলা নয়; এর সাথে সম্পর্কও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আপনি কাদের সাথে নিজেকে ঘিরে রাখছেন, তা আপনার আর্থিক সাফল্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

কার্যকর নেটওয়ার্কিংয়ের মূল সূত্রটি হলো, নেটওয়ার্ক থেকে কী পাওয়া যাবে, তা না ভেবে, নেটওয়ার্কে আপনি কী দিতে পারবেন, তা নিয়ে ভাবা। আপনার মন্ত্র হওয়া উচিত, “আমি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি?”। যখন আপনি নিঃস্বার্থভাবে অন্যদের সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে সম্পর্ক তৈরি করবেন, তখন সেই সম্পর্কগুলোই সময়ের সাথে সাথে আপনার জন্য বিশাল সুযোগের দরজা খুলে দেবে। এর একটি চমৎকার উদাহরণ হলেন হ্যারি স্টাবিংস। তিনি তার পডকাস্টের মাধ্যমে বিশ্বের ধনী এবং সফল ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছেন এবং সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে ইউরোপের অন্যতম বড় একটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড গড়ে তুলেছেন। নিঃস্বার্থভাবে ভ্যালু দেওয়ার মাধ্যমে তৈরি করা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক দীর্ঘমেয়াদে বিশাল লভ্যাংশ ফিরিয়ে দেয়।

উপসংহার: আপনার ভবিষ্যৎ আপনার হাতে

একবিংশ শতাব্দীতে সম্পদ তৈরির পথটি আগের মতো সরল নয়। এটি একটি ভাঙা আর্থিক ব্যবস্থাকে মোকাবেলা করার সামিল। পুরানো বিশ্বাসগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন, এবং কখনও কখনও অদ্ভুত মনে হওয়া অভ্যাস এবং মানসিকতা গ্রহণ করার মাধ্যমেই আজকের যুগে আর্থিক সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। এগুলো শুধু কিছু টিপস নয়, বরং একটি মৌলিক মানসিকতার পরিবর্তন। মনে রাখবেন, নিষ্ক্রিয়তাও একটি সিদ্ধান্ত—যার নেতিবাচক পরিণতি নিশ্চিত।

আজকের আলোচনা থেকে, কোন অভ্যাসটি আপনি আপনার আর্থিক জীবনে প্রথম প্রয়োগ করার কথা ভাবছেন?

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *