ক্যাশ মেশিন বই সামারি ও রিভিউ- ৬ কোটি টাকার বিজনেস সিক্রেট
কোচ কাঞ্চনের ক্যাশ মেশিন বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে আপনার নিজের বিজনেসকে বানিয়ে ফেলুন বাস্তব একটা ক্যাশ মেশিন, আর আবিষ্কার করুন টাকার খনি! কোচ কাঞ্চন-এর ১৭ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতায় লেখা এই বই পড়ে শুরু করুন মানি আর্নিং-এর আল্টিমেট জার্নি। লেখকের নিজের ব্যবসায় ৬ কোটি টাকার লস এবং সেখান থেকে খুঁজে পাওয়া ৬ কোটি টাকার সিক্রেট রিভিল করেছেন এই বইয়ে। রয়েছে বিজনেসকে অটোমেটিক মানি মেকিং মেশিনে রুপান্তর করার যুগান্তকারী সব মেথড, ফ্রেমওয়ার্ক ও প্রিন্সিপাল। নিজের ব্রেইনকে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারদর্শী করার নানা ফর্মুলা বইটিকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই বইটিকে একটা বিজনেস মাস্টারপিস বলা যায়। একজন উদ্যোক্তার মারাত্মক ৫টি ভুল ধরিয়ে দেয়া থেকে শুরু করে এই বই ব্যাখ্যা করে মার্কেটিং কিভাবে বিজনেসের জন্য ম্যাজিক হয়ে ওঠে, কাগজের নোট নয়, কনটেন্ট কেমন করে এই যুগের ক্যাশ হয়ে ওঠে, হিসেব করে তিনি মিলিয়ে দেন কোটি টাকার অংক। বইটি পড়তে পড়তে আবিষ্কার করুন কোটি টাকা আয়ের অসাধারণ সব ফর্মূলা আর খেলে চলুন দ্য বিগ গেইম অব লাইফ।
সংক্ষিপ্ত সামারি
বিজনেসকে অটোমেটিক মানি মেকিং মেশিনে রুপান্তর করার যুগান্তকারী সব মেথড, ফ্রেমওয়ার্ক ও প্রিন্সিপাল তুলে ধরা হয়েছে বাস্তবসম্মত উপায়ে, অভিজ্ঞতার আলোকে। বিগ বিজনেস দাড় করানো কিংবা স্কেলাপ করার রসদ আছে। উদ্যোক্তাদের জন্যে সবচেয়ে জরুরি Skill গুলো কোনগুলো আর কোন জিনিস গুলো মাথায় রাখতে হবে একটা Business শুরু করার আগে ও পরে, তার সব পাবেন এ বইতে।
বাইরের জগতের সাথে আউটার ব্যাটেল আর নিজের সাথে ইনার ব্যাটেল জেতার সমরাস্ত্র কারখানার সন্ধানও পাবেন। মানি ম্যানেজমেন্ট, টিম ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিং কন্টেন্ট বানানোসহ নানামুখী বিষয় আলোচনার সাথে বিগ বিজনেস দাড় করেও কিভাবে জীবনে হ্যাপী থাকা যায় তার রূপরেখা পাবেন লেখক, উদ্যোক্তা, বিজনেস ফিলোসফার, বিজনেস ফাউন্ডার, হ্যাপিনেস কোচ কাঞ্চনের নতুন বই ‘ক্যাশ মেশিন’ পড়লে।
লেখকের সকল বই সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসুন রকমারি.কম থেকে
‘ক্যাশ মেশিন’ কাদের জন্য:
- যারা বিশাল বড় স্বপ্ন দেখেন ও তা বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
- যারা বিজনেস করছেন
- যারা বিজনেস করবেন
- যারা বিজনেস স্কেল-আপ করতে পারছেন না
- যারা বিগ বিজনেস নিয়ে ভাবছেন
- যারা বিজনেস নিয়ে পড়াশোনা করছেন
- যারা বিজনেস নিয়ে পড়ান
- যারা টিম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করছেন
- যারা মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন
- যারা ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করছেন
- যারা কন্টেন্ট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন
- যারা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বিজনেস বুঝতে চান
- যারা ব্যর্থতা পেড়িয়ে সফল হয়েছেন এমন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিজনেস বুঝতে চান

ক্যাশ মেশিন অধ্যায়ভিত্তিক সারাংশ
এখন আমরা ক্যাশ মেশিন বইয়ের অধ্যায়ভিত্তিক সারাংশ আলোচনা করতে চেষ্টা করবো। আপনি সময়স্বল্পতায় পুরো বই পড়তে না পারলেও এখানের অধ্যায়ভিত্তিক সারাংশ থেকে মূলকথা জানতে পারবেন। ক্যাশ মেশিন বইয়ের সেরা এই ১০০ উক্তি বদলে দিতে পারে আপনার জীবন।
পর্ব-১: আউটার ব্যাটেল
আউটার ব্যাটেল মূলত আপনার ব্যবসায়ের সাথে প্রতিযোগী ব্যবসায়ের যুদ্ধকে বুঝায়। বইয়ের ১ম ১১ অধ্যায়ে আউটার ব্যাটেল নিয়ে আলাপ করা হয়েছে।
অধ্যায় #১# টাকাই দেবে টেনশন নয়!
প্রতিটি উদ্যোক্তার কাছেই অন্তত একটা ক্যাশ মেশিন আছে কারণ প্রতিটি ব্যবসাই এক একটা ক্যাশ মেশিন। আমাদের বিজনেস নামের ক্যাশ মেশিন চালাতে পারি না, ফ্রেমওয়ার্ক নেই, প্রসেস ফলো করি না বলেই আমাদের ক্যাশ মেশিন থেকে টাকা না বের হয়ে টেনশন বের হয়।
সত্যিকারের ক্যাশ মেশিন দিয়ে টাকা উৎপাদন করতেও যেমন মেশিন, কাগজ, সফটওয়্যার, বৈদ্যুতিক সংযোগ, প্রসেস, দক্ষ কর্মীবাহিনী ইত্যাদির প্রয়োজন তেমনি ব্যবসায় নামক ক্যাশ মেশিন দিয়ে টাকা আয় করতে আপনার দরকার স্কিল, মেথড, স্ট্রাটেজি, ফ্রেমওয়ার্ক এবং স্মার্ট ওয়ার্ক।
লেখকের সাহসী উচ্চারণ –
- ১। হার্ট দুর্বল থাকলে বইটা পড়া থেকে বিরত থাকুন।
- ২। ইনকাম গোল কোটি টাকার নিচে হলে বইটি পড়ার দরকার নেই।
- ৩। বইটি পড়া শেষ করার আগেই ব্যাংক একাউন্টের লিমিট বাড়িয়ে নিন।
অধ্যায় #২# উদ্যোক্তার ভয়াবহ ৫ ভুল!
অজ্ঞতা থেকে উদ্যোক্তারা যে ৫ টি ভয়াবহ ভুল করেন:
১. শুধু পণ্য বা সার্ভিসে ফোকাস দেওয়া -পণ্য যে কেউ বানাতে পারলেও মানুষের মন দখল করতে, কাস্টমারের সাথে ইমোশনাল কানেকশন তৈরি করতে পারে না সবাই। পণ্য/সেবার পাশাপাশি মার্কেটিং এবং সার্ভিসে মনোযোগ দিতে হবে।
ম্যাকডোনাল্ড বিশ্বসেরা হয়েছে কনসিস্টেন্সি এবং অপারেশনাল এক্সিলেন্স এর কারণে। বার্গার ম্যাকডোনাল্ডের চেয়ে ভালো বানাতে পারলেও তাদের মত দুনিয়াব্যাপী কনসিস্টেন্টলি টেস্ট ও সার্ভিস বানানো যায় না বলেই এরকম ব্র্যান্ড বিশ্বে বিরল। দিনশেষে আপনাকে পণ্য নয়, বিক্রি করতে হবে ট্রান্সফরমেশন – গাড়ি নয়, বিক্রি করুন নিরাপদ যাত্রা, ইন্স্যুরেন্স নয় বিক্রি করুন পরিবারের প্রতি ভালোবাসা, ডায়মন্ড নয় বিক্রি করুন সিম্বল অব লাভ।
ব্রান্ড ও মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ Seth Godin বলেন, Marketing is no longer about the stuff you make, but the stories you tell.
২. একাই সব করা- Chief Everything Officer Chief না হয়ে Nothing Officer হতে হবে। সফল উদ্যোক্তার বিজনেস হালকা মনিটরিং এর মাধ্যমে নিজ থেকেই চলে।
৩. টাকাকেই সকল সমস্যার সমাধান ভাবা- টাকা নয় বরং টাকাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর দক্ষতাই ব্যবসায়কে সফল করে। সুতরাং বিল্ড ইওর ব্রান্ড ফর কাস্টমার, নট ফর ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট।
৪. মানি ম্যানেজমেন্ট গাফিলতি -বিজনেস মানি মেকিং গেইম হলেও মানি ম্যানেজমেন্ট বোঝাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টাকার হিসাব রাখতে :
- * ডে টু ডে হিসাব নখদর্পনে রাখতে ডাইনামিক রিপোর্টিং সিস্টেম বানাতে হবে।
- * প্রতিমাসে প্রফিট-লস একাউন্ট চেক করুন।
- * ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট আপটুডেট রাখুন।
ব্যবসায়ের টাকা এবং ব্যক্তিগত টাকার পার্থক্য থাকা উচিৎ, এক ফান্ডের টাকা অন্য ফান্ডের কাজে বিনা হিসাবে ব্যবহার করা কোন মতেই ঠিক নয়।
তাছাড়া, যেখানে বিনিয়োগ করলে কয়েক গুণ অর্থ ফেরত আসবে সেখানেই বিনিয়োগ করুন। রাজকীয় অফিস, অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস, অপ্রাসঙ্গিক ইভেন্ট স্পন্সর না করে স্কিল ডেভেলপমেন্ট, যোগ্য কর্মী নিয়োগে অর্থ কাজে লাগানো সমীচীন।
৫. বিজনেস স্কিল শেখায় অনাগ্রহ –
বিজনেস অনেকটা রুবিকস কিউব মেলানোর মতো, স্কিল আর ফ্রেমওয়ার্ক জানলে সহজেই মিলে, না হয় সারাদিন ঘুরালেও মিলবে না। ফরমাল শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ব্যবসা দাড় করানো খুব একটা শেখায় না, সেল্ফ এডুকেশন তাই গুরুত্বপূর্ণ। ফেইল করার ভয়ে পরীক্ষা না দেওয়া যেমন, ভুলের ভয়ে কোন চেষ্টা না করাও তেমনই। কী কী ভুল করলাম তা নয়, ভুল সংশোধনে গৃহীত ব্যবস্থার উপর আমাদের সফলতা নির্ধারিত হয়।
অধ্যায় #৩# মার্কেটিং ম্যাজিক
মার্কেটিং এর ম্যাজিক জানলে আপনার কাছেও অফুরন্ত টাকা এসে ধরা দিতে বাধ্য। Money Follows Marketing. Marketing is the ultimate tool to rule the world. বর্তমান যুগে মাটি নয়, কাস্টমারের মাইন্ড দখল করলে সে তার সর্বস্ব উজার করে দেয়।
এখনকার মার্কেটিং এ রিলেশনশিপে জোর দেওয়া হয়, ইমোশনাল কানেকশন তৈরির মাধ্যমে কাস্টমারকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখতে হয়।
বিভিন্ন দিবস পালনের মার্কেটিং, লন্ডন ও রিও অলিম্পিকে Thank You Mom, স্যাভলন হেলদি হ্যান্ড চকস্টিক, সেনোরা’র মেয়ে তোমার স্বস্তি, ছেলে হোক, মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট, আপনার শিশুকে টিকা দিন, হাজার শিশুর জীবন বাচায়, এসএমসি’র ওরস্যালাইন ইত্যাদি ক্যাম্পেইন কিভাবে পৃথিবী জুড়ে আলোড়ন তুলেছে তা সবার জানা।
মানসম্মত পণ্য/সেবা দিয়ে সঠিক মার্কেটে সঠিক ম্যাসেজ পৌঁছানোই বর্তমানে মার্কেটিং এর মূলমন্ত্র। একটা ব্যবসায় তার মার্কেটিং এর সমান।
অধ্যায় #৪# পাচ প্রজন্মের মার্কেটিং
গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে এই প্রথম ৫ প্রজন্ম একসাথে বাস করছে। প্রযুক্তির কল্যাণে ১০-১২ বছরের বাচ্চারাও মিলিওনিয়ার হয়ে যাচ্ছে। চলুন মার্কেটিং এর ৫ প্রজন্ম জেনে নেই :
- ১. ফার্স্ট জেনারেশন মার্কেটিং – পুরোটা পণ্য বা সেবা ড্রিভেন। প্রডাক্ট, প্রাইস, প্লেস, প্রমোশন এখানে মুখ্য। পণ্যকে হাইলাইট করে কাজ চলে যেত।
- ২. ২য় প্রজন্মের মার্কেটিং – এই প্রজন্মের মার্কেটিং কাস্টমার ড্রিভেন। ১ম প্রজন্মের ৪পি’ র সাথে সেগমেন্টেশন, টার্গেটিং, ও পজিশনিং কে বিবেচনা করা প্রয়োজন হয়। স্থান, কাল,পাত্র, কালচার ভেদে কাস্টমারের যথাযথ প্রয়োজন খুঁজে বের করে তা ফুলফিল করাই ২য় প্রজন্মের মার্কেটিং এর মূল কথা।
- ৩. ৩য় প্রজন্মের মার্কেটিং – ভ্যালু ড্রিভেন ও ইমোশন সেন্ট্রিক মার্কেটিং এর এই যুগে কাস্টমারের পাশাপাশি সমাজ ও পৃথিবীর কল্যাণে অবদান রাখতে হবে আপনার ব্রান্ডকে। ব্রান্ডকে লার্জার দ্যান লাইফ দেখানোই ভ্যালু ড্রিভেন মার্কেটিং এর মূল কথা।
- ৪. ৪র্থ প্রজন্মের মার্কেটিং – এই পর্যায়ে মার্কেটিং ডিজিটাল ড্রিভেন- মার্কেটিং আর প্রযুক্তির ব্লেন্ডিং হয়েছে। ডেটা ড্রিভেনের গণ্ডি পেরিয়ে নলেজ ড্রিভেন পর্যায়ে পৌঁছেছে। কাস্টমারের সঠিক প্রয়োজন খুঁজে বের করে তার সুনির্দিষ্ট সমাধান তার কাছে পৌঁছে দিয়ে ইমোশনাল বন্ডিং তৈরি করাই ৪র্থ প্রজন্মের মার্কেটিং এর মূল কথা।
- ৫. ৫ম প্রজন্মের মার্কেটিং – ৩য় ও ৪র্থ প্রজন্মের মার্কেটিং এর ব্লেন্ডিং করে মানবতার জন্য প্রযুক্তি নিয়ে এই পর্যায়ের মার্কেটিং। AR, VR, IoT, NLP, Big Data এগুলো ৫ম প্রজন্মের মার্কেটিং এর বাহন।
মানুষের হিডেন নিডকে প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারে সনাক্ত করে তা ফুলফিল করার মধ্যেই ৫ম প্রজন্মের মার্কেটিংয়ের সার্থকতা।
অধ্যায় #৫# সেলস ও প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন স্ট্রাটেজি
ছোট, মাঝারি বিশেষত এফ- কমার্স, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লাভের মুখ দেখার অন্যতম দুটো সমস্যা হলো –
- ক. প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন স্ট্রাটেজি ঠিকমতো ব্যবহার না করা ও
- খ. কোয়ালিটি কন্টেন্ট দিয়ে এড রান না করা।
যে কোন ব্যবসায় গ্রো করার সিম্পল দুইটা উপায় হলো –
- ক. শেয়ার গেইন – বেটার ভ্যালু দিয়ে প্রতিযোগীদের কাস্টমারদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি করা। ছোট ব্রান্ড ও নতুন কোম্পানি এভাবে বিজনেস গ্রো করে থাকে।
- খ. মার্কেট ডেভেলপমেন্ট – এই স্ট্রাটেজিতে পণ্য বা সেবার নতুন নতুন মার্কেট তৈরি করা হয়, যেমনটি বিকাশ এমএফএসকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় করেছে। মার্কেট লিডাররা সাধারণত মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করে।
বিজনেসে প্রফিট বাড়ানো যায় ৩ উপায়ে:
- ১. কাস্টমার বাড়ানো – যত কাস্টমার তত ব্যবসায়। নতুন নতুন কাস্টমার মানে নতুন করে প্রফিট। More, Better, New পদ্ধতির মাধ্যমে কাস্টমার এবং প্রফিট বাড়ানো সম্ভব।
- ২. কনজাম্পশন বাড়ানো -এক্সিস্টিং কাস্টমারদের কাছে অধিক পরিমাণে বিক্রি করলে প্রফিট বাড়বে।
- ৩. ভ্যালু বাড়ানো – বেশি ভ্যালুর পণ্য বা সেবা বিক্রি বাড়ানো। ইউনিলিভার হুইল, রিন, সার্ফ এক্সেল ডিটারজেন্ট পাউডার এভাবে বিক্রি করে থাকে।
সেলস ম্যাক্সিমাইজেশন স্ট্রাটেজি:
বান্ডেলিং- নুডলস কোম্পানি, মোবাইল অপারেটর, অনলাইন কোর্স ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে সেলস বাড়ায়।
তাছাড়া, আপসেল, ক্রসসেল, ও ডাউনসেলের মাধ্যমেও সেলস বাড়ায়।
তদুপরি, Urgency & Scarcity দেখিয়ে এবং Social Proof ( Review, Testimonial) ইত্যাদির মাধ্যমেও সেলস বাড়ায় বহুগুণ।
অধ্যায় #৬# কন্টেন্ট ইজ নিউ ক্যাশ
বিজ্ঞাপন ডিরেক্ট এপ্রোচে সেলস করতে চায় যা থেকে মানুষ দূরে থাকতে চায় অন্যদিকে প্রাসঙ্গিক ভালো কন্টেন্ট ইনডিরেক্ট এপ্রোচ যা মানুষ খুঁজে নেয়। ভালো ফলাফল পেতে ৭০% কন্টেন্ট আর ৩০% বিজ্ঞাপনের কম্বিনেশন বেশ কাজের।
সেলিব্রিটি বনাম ইনফ্লুয়েন্সার:
সেলিব্রিটি সর্বসাধারণের কাছে জনপ্রিয়, এক নামে পরিচিত। যেমন নায়ক, নায়িকা, গায়ক, গায়িকা, ক্রিকেটার, ফুটবলার ইত্যাদি।
ইনফ্লুয়েন্সার হলো সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট যার কথায় মানুষ প্রভাবিত হয়, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে বিশ্বাস করে।
ইনবাউন্ড মার্কেটিং (কন্টেন্ট নির্ভর) এর জন্য ইনফ্লুয়েন্সার এবং আউটবাউন্ড মার্কেটিং (বিজ্ঞাপন) এর জন্য সেলিব্রিটি ব্যবহার করতে হয়।
কী ধরণের কন্টেন্ট বানাবেন?
৩ ধরণের কন্টেন্ট বানাতে পারেন-
- এটেনশন- ইন্টারেস্টিং, সট্রাইকিং, রেলিভেন্ট যা মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
- ট্রাস্ট -টেস্টিমনিয়াল, রিভিউ, সার্টিফিকেশন যা ব্রান্ডের অথরিটি প্রকাশ পায়।
- একশন-এডভার্টাইজিং কন্টেন্ট যা অফার, প্রমোশন, গুণাবলি প্রকাশের মাধ্যমে সেলসে ফোকাস করে।
- কাস্টমার মূলত কেনে ডেস্ক্রিপশন অব দ্য ট্রান্সফরমেশন। আপনি কী বলছেন সেটা নয়, কাস্টমার আপনার ব্রান্ড নিয়ে কী ভাবে এটাই ম্যাটার করে।
গুড কন্টেন্ট = রেলিভেন্সি+সলিউশন +ব্রান্ড এসোসিয়েশন
ভাইরাল বিষয় নিয়ে সবসময় কন্টেন্ট বানানো ঠিক নয়। কন্টেন্ট রেলিভেন্ট হতে হবে এবং কোন একটা সমস্যার সলিউশন থাকবে।
অধ্যায় #৭# কোটি টাকার অংক
বিজনেস ইজ আ মানে ম্যাচিং গেম আমি জিততে মেশিনের কাজ করা লাগবেই বিজনেসের পুরা গেম সাজাতে হবে আসলে পৃথিবীর সব কিছুই কিন্তু ম্যাথ, ম্যাথ ইস এভরিথিং।
সাকসেস মানে গ্রেটার দেন এক্সপেক্টেড রেজাল্ট অর্থাৎ সফলতা =প্রকৃত রেজাল্ট => প্রত্যাশিত রেজাল্ট
ব্যর্থতা =প্রকৃত রেজাল্ট < প্রত্যাশিত রেজাল্ট
আপনার পরিকল্পনা যত সুনির্দিষ্ট সংখ্যায় প্রকাশ করবেন, অর্জনের পথ তত পরিষ্কারভাবে সামনে ধরা দেবে। কোন সময়, কত টাকা, ইত্যাদি সুনির্দিষ্ট সংখ্যায় বেধে ফেলুন নিজেকে।
উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার ১ম ম্যাথ হবে নিজের আওয়ারলি ভ্যালু বের করা-
Hourly Value=Income Goal÷Hour
যদি আপনি প্রতিদিন ১০ ঘন্টা করে মাসে ২৫ দিন কাজ করে ১ কোটি টাকা আয় করতে চান, আপনার আওয়ারলি রেট হবে ৪০, ০০০ টাকা।(১০০০০০০০÷১০×২৫)
এখন, মাসে কোটি টাকা আয় করতে হলে আপনাকে অপ্রয়োজনীয় এবং লো ভ্যালু কাজ করা যাবে না। লো৷ ভ্যালু কাজ কিন্তু আবার এড়িয়েও যেতে পারবেন না। ডিসট্রাক্টেড ও অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিবেন আর লো ভ্যালু কাজ ডেলিগেট করবেন, কম টাকায় করিয়ে নিবেন।
কোটি টাকার ম্যাথ খুবই সোজা। আগে বের করবেন কতজন কাস্টমার লাগবে। আর কাস্টমার প্রতি বিক্রি এবং আয় কত।
Customers needed=Income Goal÷Income per Customer
যদি আপনার প্রতিটি কাস্টমার গড়ে ৮০০০ টাকার পণ্য বা সেবা কেনে এবং আপনি ১৫% লাভ করেন, তাহলে কাস্টমার প্রতি লাভ ৮০০০×১৫%= ১২০০ টাকা। এক্ষেত্রে, কাস্টমার দরকার হবে= ৮৩৩৪ জন। (৮৩৩৪=১০০০০০০০÷১২০০)
সুতরাং কোটি টাকা আয় করতে আপনার কাস্টমার লাগবে –
- কাস্টমার প্রতি ১ টাকা আয় হলে মাত্র ১ কোটি জন
- কাস্টমার প্রতি ১০ টাকা আয় হলে মাত্র ১০ লক্ষ জন
- কাস্টমার প্রতি ১০০ টাকা আয় হলে মাত্র ১ লক্ষ জন
- কাস্টমার প্রতি ১,২০০ টাকা আয় হলে মাত্র ৮৩৩৪ জন
- কাস্টমার প্রতি ১০,০০০ টাকা আয় হলে মাত্র ১০০০ জন
- কাস্টমার প্রতি ১,০০,০০০ টাকা আয় হলে মাত্র ১০০ জন
- কাস্টমার প্রতি ১,০০,০০,০০০ টাকা আয় হলে মাত্র ১ জন
রকমারি থেকে ক্যাশ মেশিন বইটি কিনুন।
লেখকের সকল বই সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসুন রকমারি.কম থেকে
কাস্টমার সংখ্যা জানার পর আমরা প্রায় সবাই ভুল প্রশ্ন করি এতো কাস্টমার পাব কোথায়?
সঠিক প্রশ্ন হবে এতো কাস্টমার আমাকে পাবে কোথায়? সুতরাং, কাস্টমার না খুঁজে, কাস্টমার যেন আপনাকে খুঁজে পায় সেই ব্যবস্থা করুন, যত বেশি আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানবে, আপনি তত আয় করবেন।
মানি মেইকিং রিয়েল সিক্রেট : আস্ক মোর পিপল টু বাই ইওর প্রডাক্ট।
কত জন নো বলল সেদিকে না তাকিয়ে কতজন ইয়েস দরকার সেদিকেই দৃষ্টি দিন। কতটুকু মাটি খুড়লাম সেদিকে তাকিয়ে লাভ নেই, ফোকাস শুধু স্বর্ণের দিকে।
ম্যাথের খেলা এখানেও। ১০০ জন নো বললে যদি ১ জন ইয়েস বলে, তাহলে না’র সংখ্যা বাড়ালে ইয়েস’র সংখ্যাও বাড়বে। ১ লাখ ইয়েস পেতে ১ কোটি নো সংগ্রহ করলেই খেলা শেষ!
অধ্যায় #৮# কোটি টাকার সিক্রেট: কোচ কাঞ্চন ইনডিউবিটেবল ল’ অব বিজনেস
লেখকের ৬ কোটি টাকা ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে মূলত অজ্ঞতার কারণে। কমনসেন্সের বাইরেও মার্কেটিং, ম্যাথ, স্কিল, স্ট্র্যাটেজি ও সিস্টেম লাগে ব্যবসায় টাকা কামাতে।
দ্য ফোর মুভস: কোচ কাঞ্চন ইনডিউবিটেবল ল অব বিজনেস :
LC×LC×CC×CC
১. Lead Creation– লিড মানে কন্ট্যাক্ট ডিটেইল সহ সম্ভাব্য ক্রেতা। তবে, আপনার লাগবে সেলস এনগেইজড লিড যে আপনার পণ্য বা সেবার বিষয় নিয়ে আগ্রহী।
লিডকে এনগেজড করতে আপনি যে ভ্যালুয়েবল কিছু একটা দেন, সেটাকে লিড ম্যাগনেট বলে।
ডিসকাউন্ট বা ফ্রী অফার দিয়ে লিডের কাছ থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
লিড ছাড়া কাস্টমার বানাতে গেলে ব্যবসার গতি খুব মন্থর হয়। লিডের গুরুত্ব বুঝতে কাস্টমার জার্নির স্টেজগুলো বুঝতে হবে ক্লিয়ারলি-
- ১. Stranger ( অচেনা) আপনার সম্পর্কে কিছুই জানে না।
- 2. Visitor (দর্শনার্থী) আপনার বিজ্ঞাপন, আউটলেট, ওয়েবসাইট থেকে কিছুটা জানে।
- 3. Lead (আগ্রহী ক্রেতা) আপনার অফার করা কোন মূল্যবান লিড ম্যাগনেট পেয়ে সে তার ডিটেইলস আপনাকে দেয়।
- 4. Customer (ক্রেতা) বিশেষ অফারে সাধারণত স্বল্পমূল্যের কোন পণ্য বা সেবা কিনে আপনার ক্রেতা হয়, ট্রাঞ্জেকশন করে।
- 5. Promoter (প্রচারকারী ক্রেতা) – ক্রেতাকে ভালো সার্ভিস দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারলে সে লয়্যাল কাস্টমার হয়ে আপনার ব্র্যান্ডের প্রমোটার হয়ে যাবে।
লিড হলো টাকার খনি, যত খুড়বেন ততই কামাবেন। প্রাসঙ্গিক সেলস এনগেজড লিড আপনার টাকা আয়ের লাইসেন্স।
২. Lead Conversion– লিডের কাছে কিছু বিক্রি করে তাকে কাস্টমার বানানোই লিড কনভার্শন। সাধারণত অনবোর্ডিং স্পেশাল অফারের মাধ্যমে মূল পণ্য বা সেবার পরিবর্তে ছোট কিছু একটা বিক্রি করতে হয়। এতে কাস্টমারের ব্র্যান্ড সম্পর্কে ট্রাস্ট তৈরি করতে পারে। ওএসও এমন আকর্ষণীয় ও লোভাতুর অফার যা দেখলেই কিনতে ইচ্ছে হবে। ওএসও লসেও হতে পারে, কারণ এই অফারে আসল পণ্য বা সেবা বিক্রি করা হয় না, তা বিক্রির সম্ভাবনা তৈরি করা হয়। ওএসও ক্রেতার সাধারণ বিশ্বাসকে দৃঢ় বিশ্বাসে রূপান্তর করে মূল পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে।
৩. Customer Cultivation – কৃষক যেমন চাষাবাদের মাধ্যমে ফসল ঘরে তোলে, স্পেশাল অফারের কাস্টমারের লাইফের উন্নয়নের মাধ্যমে হায়ার প্রাইসের পণ্য, এবং আনুষঙ্গিক পণ্য বা সেবা বিক্রির মাধ্যমে ব্যবসায়ও প্রফিট ঘরে তোলে। এখানে আসল পণ্য বা সেবা অফার করা হয়। কেএফসির হায়ার প্রফিট আসে কিন্ত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর পানীয় থেকে। আপসেল, ডাউনসেল, ক্রসসেল সব স্ট্র্যাটেজিই কাজে লাগাতে হবে। হাই প্রফিটেবল কাস্টমার খুঁজে বের করুন, তাদের কেয়ার নিন, হাই ভ্যালু প্রডাক্ট বিক্রি করুন।
৪. Customer Continuation – বিজনেস সাসটেইনেবল করার একমাত্র উপায় কাস্টমার কনটিনিউশন বা রিটেনশন। বর্তমান কাস্টমার ধরে রাখার চাইতে নতুন কাস্টমার তৈরিতে ৫ গুণ বেশি ব্যয় হয়, সাথে সময় ও ব্যয় তো আছেই।
পণ্য বা সেবা অর্ডারের সাথে সাথে ধন্যবাদ জানিয়ে কল, মেসেজ, নোটিফিকেশন দিন, সপ্তাহ খানেক পরে খোঁজ নিন। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে বিভিন্ন একটিভিটিতে বন্ডিং তৈরি করুন।
কাস্টমার চায় গুড ফিলিং, স্যাটিসফ্যাকশন, গুড এক্সপিরিএন্স। এটা নিশ্চিত করতে পারলে তারা লয়্যাল হয়ে অন্যদেরও আপনার ব্র্যান্ডের এডভোকেট হিসেবে সাজেস্ট করবে। ৭৭% কাস্টমার বিজ্ঞাপনের চেয়ে Word Of Mouth বেশি বিশ্বাস করে। কাস্টমার WOM করেন ২ সময়ে:
১. যখন সে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পায়
২. যখন সে কমিটেড সার্ভিস পায় না।
আপনার বিজনেস ৫৭৫% স্কেলাপ করতে পারেন ৫ গুণ কর্মতৎপরতা বাড়িয়ে:
BS = LC x LC x CC x CC
৫×৫×৫×৫= ৫৭৫
অধ্যায় #৯# বিজনেস সমস্যার আলটিমেট সলিউশন
বিজনেসের অসংখ্য সমস্যার আল্টিমেট ম্যাজিকাল সলিউশন হলো WHO. রাইট WHO খুঁজে বের করে যে যেই কাজে এক্সপার্ট তাকে দিয়েই সেটা করাতে হবে।
নিজের কমন সেন্স, ইগো বাদ দিয়ে সঠিক লোক খুঁজে ফুল টাইম, পার্ট টাইম, কন্সাল্টেটিভ, এজেন্সি সাপোর্ট নিতে হবে। WHO ব্যাপারটা ঠিক যানবাহনের মতোই – পায়ে হাটা, সাইকেল, বাইক, গাড়ি, বিমান অনুযায়ী আপনার ব্যবসার গতি নির্ভর করবে। বিজনেসে ম্যাজিক ইকুয়েশন :
Skilled You+ Right WHO = Massive Business Success
নিজের ব্রেইনকে ট্রেইন করুন, রাইট লোক দিয়ে বিজনেস পরিচালনা করুন।
অধ্যায় #১০# বিজনেসের আসল খেলা
বিজনেস মূলত সময় ও মেধা কিনে লাভে বিক্রি করে। তাই বিজনেসের আসল খেলা হলো সঠিক ট্যালেন্টেড লোকবল নিয়োগ, সঠিক লোক সঠিক জায়গায় নিয়োগ দিলে এবং তাদের ঠিক মতো চালাতে জানলে মার্কেটিং, অপারেশন্স, প্রোডাকশন চলবে অটোমেটিকলি। উদ্যোক্তার কাজ শুধু উদ্যোগ নেওয়া, ভিশন দেখা, রাইট লোক সেট করে দেওয়া।
টিম ম্যানেজমেন্ট –
বিজনেস গেইম মানে পিপলস গেইম, এই গেইমে জিততে আপনার প্রফিটেবল পণ্য নয়, লাগবে প্রফিটেবল পিপল(এমপ্লয়ি)।
Employee Metric and What to Do:
- A Player -পার্ফরম্যান্স এবং কোম্পানির নিয়ম-কানুন, কালচার পরিপালন হাই। এদের কাজ করার স্বাধীনতা দিয়ে যত্ন নেওয়া চালিয়ে যেতে হবে।
- B Player- নিয়ম কানুন, কালচার মেনে চললেও পারফরম্যান্স ভালো না। এদের স্কিল ঘাটতি আছে, স্কিল ডেভেলপমেন্ট করার উদ্যোগ নিন, কোর্স, বই পড়তে উৎসাহ দিন, মনিটরিং এ রাখুন।
- C Player- এরা কাজে দুর্দান্ত কিন্তু নিয়ম কানুন, সময়ানুবর্তিতা, টিমওয়ার্কিং এ খামখেয়ালি। এদের কোচিং দরকার। পারসোনালি সময় দিয়ে বুঝাতে হবে কী কী সমস্যা হচ্ছে।
- D Player- এরা ফাঁকিবাজ; না কাজে, না নিয়ম-নীতি- কালচারে এদের মনোযোগ ও উদ্যোগ। এদের দ্রুত বাদ দিতে হবে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে।
এই শতাব্দী ফিটফরওয়ার্ডের, দোষের পাশাপাশি ভালো দিক নিয়েও কথা বলুন, পুরো টিমকে দারুণভাবে গুছিয়ে আনুন।
হায়ারিং ও ফায়ারিং:
রাইট হায়ারিং ও রাইট ফায়ারিং গুরুত্বপূর্ণ। হায়ার স্লো, ফায়ার ফাস্ট। একজন চাকরিপ্রার্থী চাকরি পাওয়ার জন্য যতটা প্রস্তুতি নেন, নিয়োগকর্তা হিসেবে আপনাকে তার চেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিতে হবে। ইন্টিগ্রিটি, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স, ও সাবজেক্ট ম্যাটার এক্সপার্ট এই তিন গুণ দেখে হায়ার করতে হবে।
সতর্কবার্তা :
পরিবার ও আত্মীয়স্বজন থেকে হায়ার করা থেকে বিরত থাকুন। তাদেরকে অন্যভাবে সহযোগিতা করুন কিন্তু ব্যবসার দায়িত্ব ফিয়ে নয়, এতে ব্যবসায় ও সম্পর্ক দুটোই নষ্ট হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
টিমের বেস্ট পারফরম্যান্স বের করতে লিডারশিপের বিকল্প নেই। ভালো লিডারশিপ দিয়ে যে কোন ইন্ডাস্ট্রি ডমিনেট করা যায়, ভালো লিডারের অধীনে কোন খারাপ বিজনেস থাকতে পারে না। গ্রেট আলেক্সান্ডার বলতেন, আমি সিংহের নেতৃত্বে থাকা একশো মেষকে ভয় পাই, মেষের নেতৃত্বে থাকা একশো সিংহের চেয়ে বেশি। সুতরাং, আপনি সেই সিংহ হয়ে গড়ে তুলুন বিশ্বজয়ী বিজনেস।
অধ্যায় #১১# সিক্রেট অব ওয়েলথ ক্রিয়েশন
ওয়েলথ ক্রিয়েশন প্রক্রিয়ায় আয় নয়, ব্যয়ের ভূমিকাই মুখ্য, পরিকল্পনা মাফিক ব্যয় শুরু না করতে পারলে আপনার পক্ষে সম্পদ অর্জন সম্ভব নয়।
সম্পদ অর্জনের ফর্মুলার চার জানালার ঘর:
- ১. আয়ের জানালা- আপনার সময়, শ্রম, মেধার মাধ্যমে অর্জিত সব আয় এই জানালা দিয়ে ঘরে আসে।
- ২. ব্যয়ের জানালা- এই জানালা দিয়ে আপনার জীবনযাত্রাসহ বিভিন্ন খরচ আপনার ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
- ৩. সম্পদ হ্রাসকারী দায়- বিলাসিতা ও শো অফের জন্য এই জানালা দিয়ে ব্যয় করি। মিডল ক্লাসের জন্য এটা সবচেয়ে বড় ফাঁদ- লাক্সারি ট্র্যাপ। ঋণের টাকায় গাড়ি, ঘুরতে যাওয়া, বিশাল বিয়ের অনুষ্ঠান এই ধরণের ব্যয়।
- ৪. আয় বাড়ানোর সম্পদ- এটা ধনীদের জানালা- মূলধন জাতীয় সম্পদ থেকে এই জানালা দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয় ঢুকে। ব্যবসায়, বাড়িভাড়া, অন্যান্য সম্পদ থেকে আয়।
দরিদ্রদের ১ নম্বর জানালার আয়, ২ নম্বর জানালা দিয়ে খরচ হয়ে যায়, সঞ্চয় কিছুই থাকে না।
মধ্যবিত্তদের ১ নম্বর জানালার আয়, ২ ও ৩ নম্বর জানালা দিয়ে যায়, এরা দরিদ্রদের চাইতে চাপের জীবন কাটায় কারণ সম্পদ হ্রাসকারী জানালা দিয়ে এরা দায় তৈরি করে রাখে।
লেখকের সকল বই সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসুন রকমারি.কম থেকে
পর্ব-২: ইনার ব্যাটেল
এ পর্বে আমরা আপনার নিজের সাথে নিজের লড়াই নিয়ে আলাপ করবো। কিভাবে আপনার চিন্তা, মাইন্ডসেট, জ্ঞান বিগ বিজনেস গড়তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে তা আবিষ্কার করবো।
অধ্যায় #১২# ব্রেইন : দ্য আলটিমেট ক্যাশ মেশিন
ব্রেইন আমাদের দ্য আলটিমেট ক্যাশ মেশিন, আলটিমেট সুপার পাওয়ার। সেলফ টক হলো ব্রেইনের অপারেটিং ল্যাংগুয়েজ, আপনি নিজের সাথে যে ভাষায় কথা বলেন, যেভাবে চিন্তা করেন, আপনি মূলত তাই হয়ে উঠেন।
অধ্যায় #১৩# পৃথিবীর সবচেয়ে দামি সম্পদের সন্ধান
এখনকার সময়ে মনোযোগ সবচেয়ে বড় সম্পদ আর নিজের মনোযোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সবচেয়ে দামি স্কিল। এর প্রধান কারণ হলো মোমেন্টাম বজায় রাখতে পারলে কাজে কয়েকগুণ বেশি ফল পাওয়া যেতে পারে।
ম্যাসিভ সাকসেস= স্মার্ট ওয়ার্ক + কনসিস্টেন্সি
আপনি যাদের সাথে মেশেন, সময় কাটান, তাদের মতই হবে আপনার জীবন।
অধ্যায় #১৪# মন্দায় মাইন্ডসেট:
মন্দায় উদ্যোক্তার ৪ ধরণের মানসিকতা :
- ১. হতাশায় কাজ কমিয়ে দেয় বা কী হয় দেখি- এরা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারে না।
- ২. আগের মতো স্বাভাবিকভাবে কাজ করে- এরা আর্থিক ও মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অনেকেই টিকে থাকেন, অনেকেই হারিয়ে যান।
- ৩. আগের থেকে পরিশ্রম বাড়িয়ে দেয়-এরা মন্দার সাথে তাল মেলাতে পারেন এবং কম ক্ষতিগ্রস্ত হন।
- ৪. কাজের সিস্টেম আপগ্রেড করে ম্যাসিভ একশন নেন-এরা স্কিল, কৌশল, সিস্টেম ডেভেলপ করে পরিশ্রম বাড়িয়ে ম্যাসিভ ড্রাইভ দিয়ে হাই স্পিডে ব্যবসায় আরও বাড়িয়ে ফেলে। আর এটাই মন্দার পার্ফেক্ট মাইন্ডসেট!
বর্তমানের বাস্তবতায় Speedy and Steady wins the Race. Be Quick and Consistent.
যেমনটি কম্পিউটার বিজ্ঞানী রে কার্জউইল মনে করেন একবিংশ শতাব্দীতে ২০০০০ বছরের সমপরিমাণ আগাবে পৃথিবী।
এক কোটি টাকা ৫০ বছরে আয় করা আর ৫ দিনে আয় করা এক নয়। এটাই গতির খেলা!
পরিশ্রম, স্কিল, মাইন্ডসেট, স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে স্মার্টলি কাজ করে ধনী হওয়ায় দোষ নেই বরং নিজের, সমাজের, ধর্মের বিবেচনায় ভালো।
চিরসবুজ খবর –
দ্রব্যমূল্য, স্বর্ণমুল্য, জমির মুল্য, মুদ্রাস্ফীতি বাড়তেই থাকবে, ধনী-দরিদ্র বৈষম্য, ব্যবসার চ্যালেঞ্জ বাড়তেই থাকবে। এসবে কান না দিয়ে, হা হুতাশ না করে নিজের কাজ করে যান। মনে রাখবেন- রাস্তার সব লাইট একসাথে গ্রিন হবে না এবং আপনি একবারে এক টানে গন্তব্যে যেতে পারবেন না।
উদ্যোক্তাদের রিলাক্স মুডে থাকার সুযোগ নেই।
বিজনেস লাইফ=৯৭% অড জব+৩% অসাম মোমেন্টস। ৩% মজার সময় পেতে আপনাকে ৯৭% সময় ভেজাল কাধে নিয়ে বেড়াতে হবে।
মন্দা আপনার জন্য নয়, এভাবেই মনকে প্রশিক্ষিত করুন। রুমের দেয়ালে বড় করে লিখে রাখুন –
দু:খিত! আমি মন্দায় অংশ গ্রহণ করতে পারছি না।
অধ্যায় #১৫# নষ্ট ক্যালকুলেটর :দ্য হিডেন স্ট্রাগল :
নষ্ট ক্যালকুলেটরে অনেক সময় শুধু শূণ্য উঠে, তেমনি জীবনের ক্যালকুলেটর হচ্ছে সেল্ফ টক বা নিজের সাথে কথোপকথন। ডিজিটাল দুনিয়ায় হিডেন স্ট্রাগলের অন্য তম কারণ অন্যের সাথে তুলনা। অন্যের ফ্রন্ট স্টেজের জীবনকে নিজেদের ব্যাক স্টেজের সাথে মেলাতে গিয়ে অন্যের সফলতায় হিংসা থেকে ডিপ্রেশনে চলে যাই কিংবা ক্ষোভের চোটে বাজে মন্তব্য করে একটু শান্তি পাই। তাদের সফলতার পেছনের সময়, শ্রম, কষ্টের কথা চিন্তা করি না, ভাবি না আমাদের কী করণীয়।
তুলনা থেকে বের হবার ৪ উপায়:
- ১। নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করুন – প্রতিদিন নিজেকে আগের চেয়ে উন্নত করুন।
- ২। নিজের দিকে দৃষ্টি দিন- প্রতিটি মানুষ ইউনিক। নিজের মিশন, ভিশন, লক্ষ্য ঠিক করে তা অর্জনে ব্রতী হোন।
- ৩। ভেতর থেকে ধনী হয়ে উঠুন – ধনী হওয়া টাকার উপর নয়, মানসিক উদারতার উপর নির্ভরশীল।
- ৪। প্রতিযোগিতা নয় সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করুন।
মানুষ তার মনের ভেতরে বসবাস করে তাই জীবনে যাই ঘটুক, হ্যাপিনেস অন থাকুক।
অধ্যায় #১৬# দ্য বিগেস্ট এক্সপেন্স:
ব্যবসার সবচেয়ে বড় খরচ হলো অজ্ঞতার ব্যয়। এটাকে অদৃশ্য ব্যয় বা অজ্ঞতার ঋণও বলা হয়। ব্যবসাকে স্কেলাপ কিংবা লাভজনক কিভাবে করতে হয় তা না জানার ফলে এই ব্যয় বা ঋণের সৃষ্টি হয়।
অজ্ঞতার ঋণ=প্রত্যাশিত আয়-বর্তমান আয়
এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় ইতোমধ্যে সফল কারো গাইডেন্স অনুসরণ করা, স্কিল ডেভেলপ করা।
১৯৭০ সালে নোয়েল বার্চ দক্ষতার ৪টি স্তর উল্লেখ করেন :
- ১। অজ্ঞ (অচেতন অক্ষমতা)- এরা কী জানে না, তাও জানে না। জীবন কিংবা ব্যবসায় নিয়ে এরা পাজলড।
- ২। অদক্ষ(সচেতন অযোগ্যতা)- এরা জেগে ঘুমানো টাইপের। এরা কী করতে হবে জানে কিন্তু করে না।
- ৩। দক্ষ(সচেতন যোগ্যতা )- কিভাবে করতে হবে তা জানে এরা, নিজেদের যোগ্যতা সম্পর্কে সচেতন এবং যোগ্যতার ঘাটতি পূরণ করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, কোর্স, বই, বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেয়।
- ৪। ওস্তাদ (অচেতন দক্ষতা )- এটা বিশেষজ্ঞ লেভেল, সচেতন ভাবনা ছাড়াই কাজ করতে পারে এরা। প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে এরা ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজের মাস্টারি অর্জন করে ফেলে।
তবে, নিজেকে মাস্টার মনে করলেই আপনি মাস্টারি হারাবেন, তাই শেখা এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখতে হবে সর্বদা।
বিজনেস হলো সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ খেলা, এখানে সফল হতে হলে অবশ্যই ভালো মানের কোচের অধীনে অনুশীলন প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় স্কিল শেখার সময় না থাকলে বড় ধরনের ব্যর্থতার ঘানি টানার সময় সন্নিকটে।
অধ্যায় #১৭# দ্য বিগ গেইম অব লাইফ:
পৃথিবীতে আমরা এসেছি খালি হাতে, যাবোও খালি হাতে। সুতরাং এখানে হারানোর বা লস করার কিছু নেই। যেহেতু হারার বা হারানোর ঝুঁকি নেই, খেলতে হবে সেই লেভেলের, অপ্রতিরোধ্য গতিতে । জীবনে লিমিটেড গেইমে জয় পরাজয় থাকে কিন্তু বিগ গেইমে হার জিত নেই, এখানে টিকে থাকাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি হাল না ছাড়লে হারবেন না, হাল ছেড়ে দিলেন তো হারলেন। জীবনকে উপভোগ করতে হলে টপ ভিউ থেকে দেখতে হবে-যেখানে হার জিত নেই, আছে শুধু খেলার সুযোগ।
রকমারি থেকে ক্যাশ মেশিন বইটি কিনুন।
লেখকের সকল বই সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসতে পারেন রকমারি.কম থেকে
ক্যাশ মেশিন বইয়ের সেরা ১০০ উক্তি পাবেন এখানে।
সমাপনী
ব্যবসায়ের জটিল জটিল বিষয়গুলো খুব সহজেই বইটাতে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের চারপাশের সহজ সহজ উদাহরণের মাধ্যমে। কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য ব্যবহারিক অনেক পদ্ধতি রয়েছে বইটিতে। যারা উদ্যোক্তা হতে চান, অথবা যারা ব্যবসা করছেন তাদের জন্য মাস্ট রিড একটা বই। ভুল পথে অনেকদূর পর্যন্ত গিয়ে, আবার শুরু থেকে হাঁটে শুরু করাটা অনেক বড় লস। এই বইটা শুরু থেকেই আপনাকে সঠিক গাইডলাইন দিবে- যেন ব্যবসা শুরু করার পর ধরা খেয়ে নতুন করে শুরু করতে না হয়।